Tuesday, December 12, 2017

চট্টগ্রামে বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন

চট্টগ্রামে বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন 
সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, পুষ্ঠি নিরাপত্তা চাই ও খাদ্য অধিকার আইন চাই
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারন অর্থনীতি বিভাগের সমষ্ঠিক অর্থনৈতি প্রতিবেদন ২০১৫ এর তথ্য অনুযায়ী দেশে এখনো 
​২
 কোটি ৮৫ লাখ মানুষ দরিদ্র সীমার নীচে বসবাস করে যা মোট জনসংখ্যার ২৪.৫%। অপরদিকে বিশ্বব্যাংকের ট্রেকিং অন ইন-ইকোয়ালিটি প্রতিবেদন অনুসারে ২০০৯-১০ অর্থবছরে  কোটি ৮০ লাখ অতিদরিদ্র যা মোট জনগোষ্ঠির ১২.৯ শতাংশ, যারা দুবেলা ঠিকমতো খেতে পায় না। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০৩০(এসডিজি)র উন্নয়ন কাঠামোর অন্যতম লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে সব ধরনের দারিদ্রের অবসান এবং আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ক্ষুদামুক্তির অঙ্গিকার। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ খাদ্য অধিকার ও পুষ্ঠি নিরাপত্তার বিষয়ে সমর্থন দিয়ে ক্ষুদ্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রত্যয় ঘোষনা করে এসডিজি অনুমোদন করেছেন। আর এসডিজি বাস্তবায়নে প্রয়োজন রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সহযোগিতামুলক আইন ও নীতি। নীতি ও আইন যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। তাই এসডিজির মুল লক্ষ্য অনুযায়ী দেশে সবার খাদ্য নিশ্চিত করতে দ্রুত খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন দরকার। সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও পুষ্ঠি নিরাপত্তা,  ও খাদ্য অধিকার আইন এর দাবি জানিয়ে চট্টগ্রামে বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালী, গণজমায়েত ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-চট্টগ্রাম ও ক্যাব চট্টগ্রাম এর আয়োজনে ১৬ অক্টোবর নগরীর আইএসডিই বাংলাদেশ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ চট্টগ্রামের আহবায়ক এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক ও খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ চট্টগ্রামের যুগ্ন আহবায়ক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরীর সঞ্চায়লনায় আলোচনায় অংশনেন বিশিষ্ঠ নারী নেত্রী ও ইলমার প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু, সাবেক অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কবি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির প্রকৌশলী মুহাম্মদ ইব্রাহিম, চট্টগ্রাম জেলা স্কাউটস এর সম্পাদক অধ্যাপক শাহনেওয়াজ, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব সদরঘাটের সভাপতি ও সুফিয়া কামাল ফেলো জান্নাতুল ফেরদৌস, সুফিয়া কামাল ফেলো সায়মা হক, সবুজের যাত্রার নির্বাহী পরিচালক সায়েরা বেগম, চান্দগাঁও ল্যাবরেটরী ¯ু‹ল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইসমাইল ফারুকী, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক মুহাম্মদ জানে আলম, প্রাইম ক্যাডেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আবু ইউনুচ, ঘাসফুলের চন্দন কুমার বড়–য়া, মমমতার প্রবীর দাস, পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার মোঃ হাসান, ওমেন হোম এর সাধারন সম্পাদক ফারহানা আকতার, আইন কলেজের সাবেক ভিপি রেবা বড়–য়া, সিএসডিএফ’র শাম্পা কে নাহার, শিক্ষক মোঃ ইউসুফ প্রমুখ।

সভায় বক্তাগন বলেন বর্তমান সরকার, বিভিন্ন জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থার বিভিন্ন উদ্যোগের কারনে দেশে খাদ্য নিরাপত্তায় বিপুল অগ্রগতি সাধিত হলেও নিরাপদ খাদ্যের বেলায় মারাত্মক হুমকিতে আছে। অন্যদিকে সরকার হতদরিদ্রেরজন্য ১০ টাকায় চাল বিক্রিসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টণীর অনেকগুলি যুগান্তারী উদ্যোগ নিলেও মাঠ পর্যায়ে যথাযথ তদারকির অভাবে এসমস্ত কর্মসুচি গুলি কাঙ্খিত লক্ষ্য পুরণে সমর্থ হচ্ছে না। বাংলাদেশের সংবিধানে সবার জন্য খাদ্য অধিকারের কথা বলা হলেও এ পর্যন্ত খাদ্য অধিকার আইন প্রণীত হয়নি। খাদ্য উৎপাদন ও বিপনণে বহুজাতিক কোম্পানী গুলির ক্রমাগত একছত্র আধিপত্য বিস্তার  সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। আর সে কারনে বিগত বিশ বছরে দেশে খাদ্যের মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুনেরও অনেক বেশী, অথচ মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলিতে খাদ্যের মুল্য সেভাবে বাড়েনি। অন্যদিকে প্রকৃত কৃষক তার উৎপাদিত খাদ্য পণ্যের ন্যায্য মুল্য পায় না, যা মধ্যস্বত্বভোগী ও ফড়িয়ারা এবং খাদ্য ব্যবসবায়ীরাই সিংহভাগ হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে দেশীয় প্রকৃত কৃষক প্রতিবছরই লোকসান গুনছে। সেকারনেই সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, পুষ্টি নিরাপত্তা, খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদানে রাস্ট্রকে বাধ্য করার বিষয়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারনে দেশের ৪১ শতাংশ ভুমি হুমকিতে আছে। যা খাদ্য উৎপাদনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। 

বক্তাগণ সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন, নিরাপদ খাদ্য আইনের যথাযথ প্রয়োগে মাধ্যমে ভেজালমুক্ত ও নিরাপদ খাদ্যের যোগান নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ খাদ্য আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ, হতদরিদ্রের জন্য ১০ টাকায় চালবিতরনসহ সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টণীর আওতায় গৃহিত কর্মসুচি গুলির যথাযথ মনিটরিং, কৃষিতে ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং প্রান্তিক কৃষক ও বর্গাচাষীদের সরাসরি ভুর্তকির আওতায় আনা,  প্রান্তিক কৃষক এবং বর্গাচাষীদের নিয়ে সমবায় গড়ে তোলার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা জোরদার, সমবায়ভিত্তিক কৃষিব্যবস্থার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, কৃষিপণ্যের সঠিক মূল্য নিশ্চিতকরণ, সকল পর্যায়ে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা, নারী কৃষকদের স্বীকৃতি ও ভুমিতে তাদের অধিকার নিশ্চিতকরণ, নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, পশু পালনকারী, জেলেদের মতো জনগোষ্ঠীর জন্য ভূমি নিরাপত্তা, শিক্ষা, ঋনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার উৎস নিশ্চিতকরণ, খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সরকারকে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ নিশ্চিত করা, কৃষি উৎপাদনে পরিবেশের ভারসাম্য নিশ্চিত করে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রতিকূল আবহাওয়া, বন্যা, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে ফসল টিকে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করা; ২০২০ সালের মধ্যে বীজ, শস্য, পালন করা, পশুর জিনগত বৈচিত্র বাড়ানোয় কাজ করা; বিশ্ব খাদ্য পণ্যের বাজারে দাম স্থিতিশীল ও ক্রেতার হাতের নাগালের মধ্যে রাখতে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ, কৃষিভিত্তিক গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর দাবী জানানো হয়।
HEAD OFFICE OF ISDE Bangladesh New Address: House # 68 Road # 04 Block-B, Level-II Chandgaon R/A Chittagong-4212 Tel: 031-2573035, 01713-110054, 01819-331752, 01190726358, 04433382351 Fax: 031-610774(attn. ISDE Bangladesh) Email: isde.bangladesh@gmail.com, isdebd@yahoo.com

No comments:

Post a Comment